সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি॥ বরিশাল জেলার গৌরনদীর বাটাজোর-শরিকল সড়ক এখন মরন ফাঁদে পরিনত হয়েছে। দূর্ভোগের শিকার বাটাজোর ইউনিয়নের চন্দ্রহার, বংকুরা, সিংগা, নোয়াপাড়া, বাহাদুরপুর, সাহাজিরা সহ আগরপুর, শরিকল ও নলচিড়া ইউনিয়নের হাজার হাজার বাসিন্দা।
বরিশাল সংসদীয় আসন-১ এর গৌরনদী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাটাজোর-শরিকল ইউনিয়নবাসীর উপজেলা সদরে যোগাযোগের জন্য একমাত্র চলাচলের ছয় কিলোমিটারের সড়কটিতে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। মাইলের পর মাইল জমে আছে কাঁদা ও পানি।
সড়কটিতে বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ টু শরিকল লাইনের লোকাল বাস, অন্যান্য গণপরিবহন সহ পন্যবাহী যানগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার। দুর্ভোগে পড়েছেন চন্দ্রহার, বাটাজোড়, আগরপুর ও সরিকল বন্দরের শত শত ব্যবসায়ীরা।
ইতিমধ্যে ঘটেছে ছোটবড়ো দুর্ঘটনাও। স্থানীয়দের শঙ্কা এই মরণফাঁদ সড়কে জীবনের ঝুঁকি নয়ে যে সমস্ত অটোরিকশা, মাহেন্দ্রা, ভ্যান চলছে তাতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় কোন দূর্ঘটনা।
স্থানীয় জনসাধারণ অভিযোগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গত পাঁচ বছর আগে সড়কটি সংস্কার করা হয়েছিলো কিন্তু নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করায় কয়েক মাসের মধ্যেই সড়কটি চলাচলে অনুপযোগী হয়ে গিয়েছিল । এর পরে বিষয়টি জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করা হলেও রাস্তাটির কোনো সংস্কার কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে চন্দ্রহারের বাসিন্দা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রভাষক আমিনুর রহমান শামীম জানান, গত ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক চীফ হুইপ আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ এমপি ইটের তৈরি রাস্তাটিকে বাটাজোর থেকে শরিকল পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার পাকা রাস্তায় রুপান্তরিত করে জনগণের চলাচলের সুব্যবস্থা সহ বাটাজোর, সরিকল ও নলচিড়া ইউনিয়নের বহু পাকা ব্রিজ, কালভার্ট নির্মাণ করেন। ২০০১ এর পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা এলজিইডির কর্মকর্তাদের নিয়ে বহু কালভার্ট ও শাখা সড়কের জন্য চাহিদা সহ পরিমাপ করে দিয়ে আসি। কিন্তু গত বিএনপি জামাত সরকারের আমলে গৌরনদী উপজেলার কোন উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড হয় নাই। পরবর্তীতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অতীতের সব উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হয়। বাটাজোর- সরিকল সরকের বেহাল দশা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তাটি যদি গত পাঁচ বছর ধরে চলাচলের অযোগ্যই থাকতো তবে লোকাল পরিবহন চলেছে কিভাবে? বন্যা ও ভারী বর্ষণ হওয়ায় রাস্তার খোয়া উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যা নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ গুরুত্বের সাথে দেখবেন। তিনি আরো জানান, জণ দুর্ভোগের ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ অধিক সচেতন হয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রাখলে এ অবস্থার সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। ইউনিয়ন পর্যায়ে উন্নয়নের জন্য তিনি যোগ্য প্রতিনিধিত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
দৈনিক ইত্তেফাককে বাটাজোর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার দ্রুত সড়কটি মেরামতের দাবি জানিয়ে বলেন, সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই।
বাটাজোর-শরিকল সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি অফিসের প্রকৌশলী মোঃ অহেদুর রহমান জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প তৈরি করে অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী মাসে টেন্ডার হবে।
এ ব্যাপারে গৌরনদীর উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন্নাহার মেরীর বলেন, সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। অচিরেই সড়কটি সংস্কার করা হবে।
Leave a Reply